অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ছাঁটাই-দমন-পীড়ন বন্ধ, সৌমিত্রসহ শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মুক্তি, ন্যূনতম মজুরি ১৫০০০ টাকা ঘোষণা করুন-সিপিবি-বাসদ
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমদ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান আজ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে শ্রমিক নেতা সৌমিত্র কুমার দাসসহ
গ্রেফতারকৃত শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গ্রেফতার-ছাঁটাই, দমন-পীড়নের পথ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের বাঁচার মতো ন্যূনতম মজুরি ১৫ হাজার টাকা ঘোষণা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সালে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বেসিক ৩০০০ টাকা ধরে সর্বমোট ৫৩০০ টাকা ঘোষণা করেছিল সরকার। গত ৩ বছরে দ্রব্যমূল্য ও শ্রমিকদের জীবন যাত্রার ব্যয় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। গাড়ী ভাড়া, বাড়ী ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাসের দাম দফায় দফায় বাড়ছে; ফলে ৫৩০০ টাকায় শ্রমিকদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন ধারন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে সরকারি শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য পে-স্কেল ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে সর্বনিম্ন ৮২৫০ টাকা বেসিক ধরে প্রায় ১৪৫০০ টাকা বেতন নির্ধারন করা হয়েছে। অতীতে সব সময়ই পে কমিশনের চাইতে মজুরি কমিশনে বেশি মজুরি নির্ধারন করা হতো। এ পরিস্থিতিতে বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধানের দাবি যৌক্তিক। এ যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করে মালিক-সরকার দমন-পীড়ন-নির্যাতন ও কারখানা বন্ধের মতো অযৌক্তিক অন্যায় পথে শ্রমিকদের দাবিকে অস্বীকার করছে। যা মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক ও শিল্পাঞ্চলের স্বাভাবিক পরিস্থিতিকে বিঘ্নিত করছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার-মালিক পক্ষ শ্রমিক অসন্তোষের মূল কারণ দূর না করে বরাবরের মতো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হাজির করে শ্রমিকদের দাবি পাশ কাটাচ্ছে এবং মিথ্যা মামলায় হয়রানী, গ্রেফতার, নির্যাতন, ছাঁটাই করছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতেও ষড়যন্ত্রের কথা বলে মালিক ও সরকার কাউকে চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি এবং তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এবারেও একই মিথ্যা প্রচার করছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মিথ্যা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার বন্ধ করে শ্রমিকদের মূল সমস্যা বাঁচার মতো ন্যূনতম মজুরি ১৫০০০ টাকা ঘোষণা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন ও কর্মস্থলে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। অন্যথায় দমন-পীড়নের ভুল পথে চললে আশুলিয়ার আন্দোলন সেখানে সীমাবদ্ধ না থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেন নেতৃবৃন্দ। এতে শ্রমিক, মালিক, শিল্প উৎপাদন তথা দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ফলে সময় থাকতে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।