চান্দপুর-বেগমখান চা বাগানের ‘ইকনোমিক জোন’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি
চান্দপুর-বেগমখান চা বাগানের ৫১১.৮৩ একর কৃষি জমিতে ‘ইকনোমিক জোন’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও সকল চা শ্রমিকদের ভূমি অধিকারের দাবিতে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত
০৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ইং চান্দপুর-বেগমখান চা বাগানের ৫১১.৮৩ একর কৃষি জমিতে ইকোনোমিক জোন স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং দেশের সকল চা শ্রমিকদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইকনোমিক জোনের জন্য নির্ধারিত জমিতে লস্করপুর ভ্যালির সভাপতি অভিরত বাক্তির সভাপতিত্বে ও ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নৃপেন পালের পরিচালনায় দেশের বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ, রাজনীতিবিদ, শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, লেখক, গবেষক, কলামিস্টদের পাশাপাশি দেশের সবকটি চা ভ্যালির নেতৃবৃন্দ ও চা শ্রমিকদের অংশগ্রহণে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহবায়ক মাননীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তেল-গেস-বিদ্যুত-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, কার্যকরী সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল -বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির বজলুর রশিদ ফিরোজ, গনসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য সৈকত মল্লিক, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি লাকি আক্তার, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি শিউধনি কূর্মি, সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি, ভূমি রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক স্বপন সাঁওতাল, কাঞ্চন পাত্র, লক্ষীচরণ বাক্তি, যুগ্ম সদস্য সচিব সূর্য কুমার রায়, সহ সদস্য সচিব সাধন সাঁওতাল, সাতটি চা ভ্যালির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকবৃন্দ এবং সকল চা বাগানের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন চা বাগান ছাত্র যুবকদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিভূতিভূষণ মাহাতু, ভূমি রক্ষা সংহতি কমিটির(ঢাকা)আহ্বায়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, বাসদ হবিগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক জুনায়েদ আহমেদ, সিপিবি হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি হাবিবুর রাহমান, রি রোলিং মিল শ্রমিক ফ্রন্ট সভাপতি ইমাম হোসেন খোকন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সম্পাদক সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।
বক্তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের এই ঘোর চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন- চা শ্রমিকদের জমি কেড়ে নিয়ে ইকনোমিক জোন তৈরি করার অর্থ হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেয়া। পাশাপাশি কৃষিজীবি এই মানুষদের ভূমির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা।
সমাবেশে ভূমি রক্ষা কমিটি ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের সাথে বাংলাদেশের চা শ্রমিক ইউনিয়ন আলোচনায় বসবে। এরপর ২১ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফরের সময়েও যদি এই জমিতে ইকনোমিক জোন স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা ও একই সাথে সকল চা শ্রমিকের ভূমি অধিকার দেয়ার ঘোষণা না আসে, তবে ২৫ জানুয়ারি দেশের সব চা বাগান বন্ধ রাখার পাশাপাশি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। এছাড়া আগের মতই প্রতিদিন ২ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসুচী পালন করবে সব বাগানের শ্রমিকরা।