বেগম রোকেয়াকে স্মরণ করা জরুরী তারচেয়েও বেশি জরুরী তাঁকে মর্মে ধারণ করা
বেগম রোকেয়াকে স্মরণ করা জরুরী তারচেয়েও বেশি জরুরী তাঁকে মর্মে ধারণ করা – বেগম রোকেয়া স্মরণে আলোচনা সভায় বক্তাগণ
গত ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ছিল নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার ১৩৯তম জন্ম ও ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ দিবস উপলক্ষে বেগম রোকেয়া স্মরণে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আজ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ বিকাল ৩.৩০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর কেন্দ্রীয় সভাপতি রওশন আরা রুশো ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু। আলোচনা করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. জোবাইদা নাসরিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সায়েমা খাতুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সিত্তুল মুনা হাসান এবং ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজি বিভাগের শিক্ষক শিপ্রা মন্ডল। আলোচনা সভা শেষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
আলোচনা সভায় কমরেড রাজেকুজ্জামান বলেন, নারীশিক্ষা বিস্তারে বেগম রোকেয়ার ভূমিকার তুলনা হয়তো পাওয়া যাবে। কিন্তু মানুষের দুঃখ, বিশেষ করে অবহেলিত নারীসমাজের অবর্ণনীয় দুর্গতির বাস্তব চিত্র উপস্থিত করে শ্লেষ, বিদ্রƒপ, কৌতুকরস, বৈজ্ঞানিক যুক্তিবাদ, ঐতিহাসিক নজির ও উন্নত জীবনের স্বপ্ন তুলে ধরে, উঁচু স্তরের রুচি ও মূল্যবোধের আবেদন দিয়ে, বিবেকের কষাঘাতে নারীমুক্তির যে আকুতি রোকেয়া তাঁর সাহিত্যকর্ম ও জীবনসংগ্রামের মধ্যে রেখে গেছেন, সেখানে তিনি অনন্য ও বিশিষ্ট।
ড. জোবাইদা নাসরিন, বেগম রোকেয়ার সেই আহ্বান ‘জাগো গো ভগিনী!’ কে ধারণ করে আসুন, সমস্ত শোষণ, নির্যাতন, অন্ধত্ব, কুসংস্কার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই; নারী-পুরুষের মিলিত সংগ্রাম গড়ে তুলি; মনুষ্যত্ব, সভ্যতা, স্বাধীনতা ও মানবতার দাবি আদায় করি।
ড. সায়েমা খাতুন বলেন, নারী নির্যাতনের নির্মম বাস্তবতা ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিবর্তনে, সমাজের সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, নারীমুক্তির আন্দোলনে বেগম রোকেয়া আজও প্রেরণার উৎস।
ড. সিত্তুল মুনা হাসান বলেন, আজকের সময়ে আমাদের দেশের যে মহিলারা নারীস্বাধীনতার যথার্থ লড়াই গড়ে তুলতে চান, তারা রোকেয়ার জীবন ও রচনা থেকে শেখার বহু বিষয় পাবেন। রোকেয়াকে জানবার ও বোঝার প্রয়োজন নিছক একাডেমিক বিষয় নয়, তা আজকের নারীমুক্তির আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে।
শিপ্রা মন্ডল বলেন, বেগম রোকেয়ার শিক্ষাকে পাথেয় করে আজকের দিনে নারীমুক্তি আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
সভাপতি রওন আরা রুশো বলেন, নারীমুক্তির রাস্তা আমরা পাব বেগম রোকেয়ার শিক্ষা থেকে, ইতিহাসের মহিয়সী নারীদের শিক্ষা থেকে। সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম মানব ইতিহাসের মহানায়কদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে এদেশের নারী সমাজের মুক্তির আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেই জন্য সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।