বরিশালে মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তীর উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি
ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন এবং ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি

বরিশালে বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তীসহ দলের নেতা-কর্মীদের ওপর সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের সন্ত্রাসী হামলা, ভোটকেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারা, জালভোট প্রদান, ভোট কেন্দ্র থেকে বাসদসহ বিরোধী সকল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া, সিলেটে ভোটারদের ওপর গুলিবর্ষণসহ তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেই ব্যাপক কারচুপি, কেন্দ্র দখল, হামলা, ব্যালটে সিল মারার ঘটনা ও কমিশনের নির্লজ্জ ব্যর্থতার প্রতিবাদে এবং ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বর্থ কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে বাসদের উদ্যোগে আজ ৩১ জুলাই দেশ্যবাপী কর্মসূচি অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সমানে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ ঢাকা মহানগর কমিটির আহবায়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, ঢাকা মহানগর নেতা জুলফিকার আলী ও শম্পা বসু। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তোপখানা রোডে এসে শেষ হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষমতাসীন দল গতকাল ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত বরিশালসহ তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে ভোটারদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ভোট কেন্দ্র থেকে সকল বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় সিল দিয়ে নির্বাচনকে অতীত তামাশায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বরিশালে সদর গার্লস স্কুল কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই এর সময় বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা হাতে নাতে নৌকার পরিচিতদের কর্তৃক ব্যালট ছিনতাইকারীদের ধরে ফেললে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা করে মারাত্মকভাবে আহত করে। হামলায় তার বাম হাত ভেঙে যায়, নখ উপরে ফেলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জমখ হয়। তার সাথে থাকা বরিশাল জেলা বাসদ আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন, বদরুদ্দোজা সৈকত, ইমন, মিথুন চক্রবর্ত্তী, টুম্পা, নীলিমাসহ নেতাকর্মীদের ওপরও হামলা করে তাদেরকে আহত করা হয়। এই ঘটনা রিটার্র্নিং কর্মকর্তাকে জানালেও তারা ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। পদক্ষেপ তো দূরের কথা। হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে ভেতরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা মেয়র পদের ব্যালটে নৌকা প্রতীকে গণহারে সিল দিতে থাকে। কার্যত ভোটের নামে ভোট ডাকাতির এক নজিরবিহীন নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার ব্যালট ছিনতাইকারীদের বাঁধা না দিয়ে বরং তাদের সহায়তা করেছে এবং ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী যখন প্রতিবাদ করে তখন নিরব থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছে যে মনীষা বহিরাগতদের নিয়ে বুথে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করেছে। পুলিশ ও কমিশন মিলে নির্বাচন নামক তামাশার নাটক করে তারা নিবাচন স্বাভাবিক দেখানোর পরিকল্পিত ছকের দিকে অগ্রসর হলেও জনগণের চোখে ধূলা দেয়া সম্ভব হয়নি। ভোট ডাকাতির চিত্র প্রায় সকল গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একের পর এক নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে করতে গতকাল তিন সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষমতাসীন দল জনগণের ভোটের অধিকার সম্পূর্ণভাবে হরণ করে নিয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে জনগণ ভোটের অধিকার পাবে না। নির্বাচন কমিশনও শাসক দলের পক্ষে এবং ঘেরা টোপের মধ্যেই আটকে রয়েছে। সব জায়গায় তাদের অনেকে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীর ভূমিকা পালন করেছে। ফলে ভোটের অধিকার দিতে ব্যর্থ ও অথর্ব কমিশনের অপসারণ ছাড়া অন্য কোন পথ নাই।
নেতৃবৃন্দ জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলে নিজেদের সংবিধান স্বীকৃত ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান জানান। একই সাথে বরিশালে ডা. মনীষার উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচার এবং ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন।