শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং শিশু অধিকার রক্ষার দাবিতে জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর বিভাগীয় শহর ও জেলা-উপজেলায় কনভেনশন ও শিশু-কিশোর-অভিভাবক সমাবেশ, ডিসেম্বরে নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ এবং জানুয়ারিতে সারাদেশের শিশু-কিশোরদের ঢাকায় সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম ও শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে আজ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং শিশু অধিকার রক্ষার দাবিতে জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক এইচ কে এস আরেফিন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক স্থপতি সামছুল ওয়ারেস, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গাজী এম এ জলিল, গণসংগীত শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু, আইনবিদ অ্যাড. ড. হাফিজুল আলম, শিশু কিশোর মেলার সম্পাদক কিবরিয়া হোসেন এবং নির্যাতিতদের অভিভাবকদের মধ্যে খুলনার রাকিবের মা লাকি বেগম ও ছোট বোন রিমি আক্তার, নওগাঁর আদিবাসী কিশোর মিঠুন খালকোর বাবা শুনো খালকো, নওগাঁর শিশু শিফাতের বাবা মো: আকরাম পারভেজ হীরা। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সূর্যমুখী শিশু-কিশোর সংগঠনের সভানেত্রী শাহরিয়া আক্তার বুলু। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি জনার্দন দত্ত নান্টু এবং পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসু।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে রাজাকার আলবদর ছাড়া কোন বাঙ্গালী দ্বারা বাঙ্গালী শিশু হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষার বিপরীতে রাষ্ট্র পরিচালনার ফলে দিন দিন নারী নির্যাতন, শিশু হত্যা, ধর্ষণের ঘটনাগুলো বাড়ছে। এগুলো রোধ করতে পুঁজিবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থার পরিবর্তন করে একটি সাম্যের মানবিক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনা অমানবিক। এটা বন্ধ করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সমন্বয়ে নির্যাতন বিরোধী একটি প্ল্যাটফরম গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক এইচ কে এস আরেফিন শিশু অধিকারের বিষয়গুলো পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব করেন।
রাকিবের মা লাকি বেগম, মিঠুন খালকোর বাবা শুনো খালকো এবং শিফাতের বাবা মো: আকরাম পারভেজ হীরা তাদের সন্তানদের হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন। বিচারে তারা এমন দৃষ্টান্ত দেখতে চান যেন তাদের মতো আর কোন বাবা-মায়ের বুক খালী না হয়।
জাতীয় কনভেনশন থেকে সভাপতি জনার্দন দত্ত নান্টু নিম্ন লিখিত দাবি ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
দাবিসমূহ:
১. অবিলম্বে শিশু নির্যাতন বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নির্যাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
২. আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিশুর সকল মানবিক অধিকার রক্ষায় কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৩. শিশুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
কর্মসূচি:
আগামী অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরসমূহে কনভেনশন ও শিশু-কিশোর-অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ডিসেম্বরে নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ এবং
জানুয়ারিতে সারাদেশের শিশু-কিশোরদের ঢাকায় সমাবেশ করে পধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।