৭ কলেজের সংকট নিরসনে কলেজসমূহকে সমন্বিত করে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত করার দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ৭ কলেজের চলমান সংকটসমূহের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে অবিলম্বে কলেজসমূহকে সমন্বিত করে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৭ সালেই সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির বিরোধিতা করেছিল। আমরা তখন বার বার বলেছিলাম কলেজসমূহের যে স্থায়ী সংকট রয়েছে সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র প্রশাসক পাল্টে এই সংকটের সমাধান হবে না। ফলস্বরূপ আমরা দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির পর থেকেই বারবার এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আন্দোলন করতে গিয়ে চোখ হারিয়েছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী হাফিজুর মোল্লা। গত ২৬ জানুয়ারি গভীর রাতে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।
আমরা পূর্বেই বলেছিলাম, এই অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাতে হলে সংকটের মূলে যেতে হবে প্রথমত দ্বৈত প্রশাসনিক ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। দ্বিতীয়ত কলেজসমূহের দীর্ঘ দিনের শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট, গবেষণার পরিবেশ নির্মাণ করা, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, স্বতন্ত্র পরীক্ষার হল নির্মাণসহ আবাসন ও পরিবহনের সংকট নিরসন করে প্রকৃত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে এই সংকটের কোন সমাধান তো আসবেই না বরং নতুন সংকট যুক্ত হবে। কিন্তু অধিভুক্তির প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও সে সকল সংকট নিরসনে কোন কার্যকর উদ্যোগ তো গ্রহন করা হলই না বরং এই পরিকল্পনাবিহীন অধিভুক্তি নানা নতুন নতুন সংকটের জন্ম দিল। সেশন জট, রেজাল্ট বিপর্যয়, দ্বৈত প্রশাসনিক ব্যবস্থার জটিলতা ইত্যাদি নানা সংকটে বিপর্যস্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা বারবার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও নিজের শিক্ষার্থীদের সামলাতেই যারা হিমশিম খায় এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের চাপ নেয়ার মতো প্রশাসনিক ও জনবলের কাঠামো না থাকায় সংকট আরও তীব্র হয়। এরই ফলশ্রুতিতে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলের দাবি উঠে এবং জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর তা আরও অধিক মাত্রায় উচ্চকিত হয়। নানান কর্মসূচী ও আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা অধিভুক্তি বাতিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তাবায়ন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাকে তৎপর হয়ে দ্রুত এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। নামমাত্র আলাদা কাঠামো নয় চলমান শিক্ষার সংকট নিরসন করতে হলে স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই বলে মন্তব্য করেন নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গত পরশু রাতের সংঘর্ষের ঘটনার দায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারে না। তাদের দায়িত্বহীন ভূমিকা ও আচরণ এই সংঘর্ষকে উসকে দিয়েছে। আবার পুলিশ যে আচরণ করেছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। অবিলম্বে এর পেছনের হোতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ আরও স্মরণ করিয়ে দেন যে ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ৭ কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। সেই স্পিরিট ও চেতনাকে যেন কোনভাবে কোন শক্তি কলঙ্কিত করতে না পারে সে বিষয়ে সকলের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
বার্তা প্রেরক
অনিক কুমার দাস
দপ্তর সম্পাদক
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটি
০১৯২০৪০১৪৪৩